বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের)- এর জীবন বৃত্তান্ত
পুরো নামঃ গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
পিতার নামঃ মৃত মকবুল হোসেন, তিনি একজন প্রথিতযশা আইনজীবি ছিলেন। বৃটিশ আমলে তিনি সক্রিয় রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি কুচবিহার মহারাজার মন্ত্রী হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

মাতার নামঃ মৃত মজিদা খাতুন, একজন আদর্শ মাতা হিসাবে সুপরিচিত। লালমনিরহাটের মজিদা খাতুন সরকারী মহিলা কলেজ ও কুড়িগ্রাম জেলায় সরকারী মহিলা কলেজ তাঁর নামে নামকরন করা হয়। এছাড়াও রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় এই মহীয়সী নারীর নামে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

ভাই-বোনঃ চার ভাই ও পাঁচ বোন। প্রয়াত বড় ভাই হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্টাতা চেয়ারম্যান। আরেক বড় ভাই মরহুম মোজাম্মেল হোসেন লালু সংসদ সদস্য ও জনতা ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন। ছোট ভাই হুসেইন মঞ্জুর মোর্শেদ একজন প্রকৌশলী। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর শিক্ষক ছিলেন। বর্তমানে তিনি আমেরিকা প্রবাসী।

স্ত্রী শেরিফা কাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে অনার্সসহ মাষ্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত ও বর্তমানে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও রেডিও-এর একজন নিয়মিত সংগীত শিল্পী। একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি জাতীয় পার্টির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারনী ফোরাম প্রেসিডিয়ামের সদস্য।
মেয়ে ইশরাত জাহান কাদের বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে শিক্ষকতা করতেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী।

ছেলে শামস বিন কাদের কম্পিউটার সায়েন্স এবং মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন উভয় বিষয়ে গ্রাজুয়েট। পরবর্তীতে মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন বিষয়ে লন্ডন কিংস কলেজ থেকে মাষ্টার্স (এম.এস.এস) ডিগ্রী প্রাপ্ত। তিনি নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ছিলেন। তিনি অস্ট্রেলিয়া হতে পি.এইচ.ডি ডিগ্রী অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি কানাডা প্রবাসী। একই সঙ্গে তিনি একজন সঙ্গীত শিল্পী।

বিদেশ সফরঃ ইরাক, অস্ট্রেলিয়া, আরব-আমিরাত, সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, পাকিস্থান, ভারত, নেপাল, চীন, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, জাপান, নামিবিয়া, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, দক্ষিন কোরিয়া, দক্ষিন আফ্রিকা, কাজাকিস্থান, চেক রিপাবলিক, ফ্রান্স, জার্মানী, অস্ট্রিয়া, মিশর সফর করেন।

শিক্ষাঃ এসএসসি রংপুর জেলা স্কুল ১৯৬৩, এইচএসসি কারমাইকেল কলেজ, রংপুর ১৯৬৫ এবং বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং (মেকানিক্যাল) বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি (ইটঊঞ), ঢাকা হতে ফার্স্টক্লাস প্রাপ্ত ১৯৬৯।

কর্ম অভিজ্ঞতাঃ শিক্ষা জীবন শেষ করে নারায়নগঞ্জ ডকইয়ার্ডে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কর্মজীবন শুরু। পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ টোব্যাকো কোম্পানী, ইরাক সরকারের অধীনে সে দেশের কৃষি মন্ত্রনালয়ে, যমুনা অয়েল কোম্পানীর সর্বোচ্চ পদ জেনারেল ম্যানেজার ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের ডাইরেক্টর (প্ল্যানিং ও অপারেশন) হিসাবে কর্মরত ছিলেন।

রাজনৈতিক কর্মকান্ডঃ বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনে থাকাকালীন অবস্থায় সরকারী চাকুরী থেকে ইস্তফা দিয়ে জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে যোগদান এবং জাতীয় পার্টির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী ফোরাম প্রেসিডিয়ামের সদস্য পদ লাভ করেন। ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লালমনিরহাট-৩ আসন থেকে (সদর উপজেলা), ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ (সদর উপজেলা) আসন এবং ২০০৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লালমনিরহাট-৩ আসন থেকে (সদর উপজেলা) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর তিনি সরকারের মন্ত্রী হন। সে সময় ৭জানুয়ারী, ২০০৯ হতে ৭ডিসেম্বর, ২০১১ পর্যন্ত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং ৭ডিসেম্বর, ২০১১ হতে ১১জানুয়ারী, ২০১৪ পর্যন্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসাবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে সুনাম অর্জন করেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসন হতে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করেন। এ সময়কালে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ (রংপুর সদর ও রংপুর সিটি কর্পোরেশন) আসন হতে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করেন। তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।

অন্যান্য কর্ম ঃ টেলিভিশনের বিভিন্ন টকশোতে অংশগ্রহন করে থাকেন। এছাড়াও ইংরেজী ও বাংলা দৈনিক সংবাদপত্র ও পত্রিকার একজন নিয়মিত কলাম লেখক। দেশে-বিদেশে সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহন, রিসোর্সপার্সন হিসাবে ও কখনও কখনও ট্রেনিং প্রোগ্রামের প্রশিক্ষক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করে থাকেন। বাংলাদেশে তিনি একজন সমাজসেবক হিসাবেও পরিচিত।

প্রকাশনাঃ ‘কালো গোলাপ’ কবিতার বই। বাংলাদেশের সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের উপর লেখা ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র সোনার পাথরবাটি’ ও একই প্রেক্ষাপটের উপর ইংরেজিতে লেখা ‘‘MISERIES OF MISCONCEIVED DEMOCRACY”  নামে দুটি বই প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে একই বই সমূহের দ্বিতীয় সংস্করন ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র সোনার পাথরবাটি’-২য় খন্ড এবং ‘MISERIES OF MISCONCEIVED DEMOCRACY’-Volume-2 নামে বই সমূহ প্রকাশিত হয়েছে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ-এর লেখা ‘জীবন যখন যেমন’ কবিতার বইটি তিনি গোলাম মোহাম্মদ কাদের-কে উৎসর্গ করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, “আমার জীবনপ্রবাহের সাথে একান্তভাবে জড়িয়ে আছে আমারই কনিষ্ঠ ভ্রাতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। আদর করে ডাকি সেলিম নিকনামে। অনেক গুণে গুনী আমার এই ভাই। রাজনৈতিকভাবেও সেলিম আমার সহকর্মী। ওকেই আমি উৎসর্গ করলাম আমার প্রিয় এই কাব্যগ্রন্থ- ‘জীবন যখন যেমন’।

ঠিকানাঃ দি স্কাই ভিউ, বাসা-১, রোড-১, নিউসেনপাড়া, রংপুর।
বাসা-৯/এ, রোড-৩৩, সেকটর-৭, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০।